কার্বোনারী আন্দোলনের গুরুত্ব লেখ

কার্বোনারী / কার্বোনারি আন্দোলনের গুরুত্ব -


খণ্ড বিখণ্ড ইতালির ঐক্য সাধনে উনিশ শতকের প্রথমদিকে ইতালিতে যেসব গুপ্ত সমিতি গড়ে উঠেছিল সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল কার্বোনারী সমিতি। কার্বোনারী সমিতির উদ্যোগে দুটি বড় আন্দোলন গড়ে উঠেছিল ১৮২০ খ্রিস্টাব্দে এবং ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে। কার্বোনারী আন্দোলন শেষপর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছিল কিন্তু তাদের আন্দোলনের গুরুত্বকে একেবারে অস্বীকার করা যায় না। নিন্মে কার্বোনারী আন্দোলনের গুরুত্ব আলোচনা করা হল -

ভুলত্রুটির উপলব্ধি ঃ কার্বোনারী আন্দোলনের ব্যর্থতার ফলে এই আন্দোলনের কর্মপদ্ধতির মধ্যে যে ভুলত্রুটি ছিল সেগুলি ধরা পড়ে। এর থেকে এই আন্দোলনের নেতারা শিক্ষা নেনে যে, এর পর থেকে আন্দোলনের কর্মপদ্ধতির পরিবর্তন প্রয়োজন।

রিসর্জিমেন্টো ঃ কার্বোনারী আন্দোলন ব্যর্থ হলেও এই আন্দোলন সাধারণ ইতালিবাসীর মনে জাতীয়তাবাদের সঞ্চার ঘটিয়েছিল। এজন্য এই আন্দোলনের পর সমগ্র ইতালি জুড়ে জাতীয়তাবাদী জাগরণ দেখা যায়, যা 'রিসর্জিমেন্টো' বা পুনরুত্থান নামে পরিচিত।

গ্রন্থাদির প্রচার ঃ কার্বোনারী আন্দোলনকালে বিভিন্ন গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা প্রকাশ করে দেশবাসীর মনে বিদেশি শাসকদের বিরুদ্ধে তীব্র ঘৃণার মানসিকতা ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এবিষয়ে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা গ্রহণ করেছিল কাউন্ট ক্যাভুর সম্পাদিত 'রিসর্জিমেন্টো' পত্রিকা। তাছাড়া জিওবার্তি ও আজেগেলিয়া প্রমুখের রচনার মাধ্যমেও দেশবাসীর মনে বিদেশিদের বিরুদ্ধে ক্ষোভের সঞ্চার ঘটানো হয়েছিল।

প্রকৃত শত্রু ঃ কার্বোনারী আন্দোলনগুলি অস্ট্রিয়ার নেতৃত্বে খুবই নিষ্ঠুরভাবে দমন করা হয়। এরফলে ইতালি বাসী বুঝতে পেরেছিল যে, তাদের প্রকৃত শত্রু হল অস্ট্রিয়া এবং অস্ট্রিয়াকে বিতাড়িত করতে না পারলে প্রকৃতপক্ষে ইতালির ঐক্য সাধন সম্ভব নয়।

মূল্যায়ন ঃ কার্বোনারীদের সক্রিয় আন্দোলনের ফলে ইতালিবাসী বুঝতে পারে যে ইতালির বিভিন্ন রাজ্যের শাসকরা খুব দুর্বল এবং তারা প্রত্যেকেই অস্ট্রিয়ার শক্তিতে শক্তিশালী। তাই ইতালির ঐক্য সাধনের জন্য চাই অস্ট্রিয়াকে ইতালি থেকে বিতাড়িত করা।


আরও পড়ুন ঃ

Post a Comment

Previous Post Next Post