গ্রিসের স্বাধীনতা যুদ্ধের কারণ -
এশিয়ার অটোমান তুর্কি মুসলমানরা পঞ্চদশ শতকে গ্রিসের ওপর আধিপত্য স্থাপন করে। দীর্ঘ চার শতক পর ঊনবংশ শতকের প্রথম দিকে গ্রিকরা তুরস্কের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা আন্দোলন শুরু করে। এর পরিণতিতে তুরস্ক ১৮৩২ খ্রিস্টাব্দের লন্ডন চুক্তির দ্বারা গ্রিসের স্বাধীনতা মেনে নেয়। নিন্মে গ্রিসের স্বাধীনতা যুদ্ধের কারণ আলোচনা করা হল -
জাতীয়তাবোধ ঃ তুরস্কের অধীনে থাকা অন্যান্য পরাধীন রাষ্ট্রগুলির তুলনায় গ্রিসের লোকেরা ব্যবসা-বাণিজ্য, সরকারি চাকরি, শিক্ষা ইত্যাদি নানা ক্ষেত্রে অধিক সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারত। এরফলে গ্রিসের জনগণের মনে একধরণের জাতীয়তাবোধ ও শ্রেষ্ঠত্বের মানসিকতা সৃষ্টি হয়।
অত্যাচারী শাসন ঃ গ্রিকদের প্রতি তুর্কি শাসকদের শোষণ, বৈষম্যমূলক কর ব্যবস্থা, অবিচার, সেনাবাহিনীর অত্যাচার ইত্যাদির জন্য গ্রিকরা তুর্কি শাসকদের প্রতি ক্ষোভ জন্ম দিয়েছিল। সাহসী এবং যোদ্ধা গ্রিক জাতির পক্ষে তুর্কিদের এই শাসন মেনে নেওয়া সম্ভব ছিল না।
বৌদ্ধিক চেতনা ঃ অষ্টাদশ শতকের শুরু থেকে গ্রিসের বিভিন্ন কবি, সাহিত্যিক প্রমুখ শ্রেণির মানুষেরা সাধারণ গ্রিকবাসীদের নিজেদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে অবহিত করতে শুরু করেন। এরফলে সাধারণ গ্রিকবাসীর মনে বৌদ্ধিক চেতনার বিকাশ ঘটে এবং তারা নিজেদের স্বাধীনতা সম্পর্কে সচেতন হতে থাকে।
ফরাসি বিপ্লবের প্রভাব ঃ ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দের ফরাসি বিপ্লবের বিভিন্ন আধুনিক বিপ্লবী ভাবধারা গ্রিকদের অনুপ্রানিত করেছিল। এরফলে তারা তুরস্কের অধীনতা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য তৎপর হয়ে ওঠে।
মূল্যায়ন ঃ ১৮৩২ খ্রিস্টাব্দের লন্ডন চুক্তির মাধ্যমে তুরস্ক গ্রিসের স্বাধীনতা মেনে নেয়। গ্রিসের স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য রাশিয়া তাকে সহযোগিতা করেছিল। ফলে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে রাশিয়ারও মর্যাদা বৃদ্ধি ঘটেছিল।
আরও পড়ুন ঃ