কার্বোনারী আন্দোলন বলতে কি বোঝো

কার্বোনারি / কার্বোনারী আন্দোলন -


বিদেশি আধিপত্য থেকে মুক্তি এবং ইতালির ঐক্য প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে উনিশ শতকের প্রথমদিকে ইতালিতে যেসব গুপ্ত সমিতি গড়ে উঠেছিল সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল কার্বোনারী সমিতি। কার্বোনারী সমিতির উদ্যোগে উনিশ শতকের প্রথম দিকে দুটি গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলন সংগঠিত হয়েছিল। এগুলি হল -

১৮২০-১৮২১ খ্রিস্টাব্দের আন্দোলন ঃ

     (i) নেপলস ঃ ১৮২০ খ্রিস্টাব্দের ইতালিতে নতুন সংবিধান প্রবর্তনের দাবিতে কার্বোনারী সমিতির উদ্যোগে আন্দোলন শুরু হয়। এই বিদ্রোহে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন জেনারেন পেপ। বিদ্রোহীদের চাপে সেখানকার বুরবোঁ রাজবংশের রাজা নতুন সংবিধান প্রণয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

     (ii) পিডমেন্ট ঃ ১৮২১ খ্রিস্টাব্দে পিডমন্টে সান্তা রোসার নেতৃত্বে বিদ্রোহ শুরু হয়েছিল। এই বিদ্রোহ পার্মা, মডেনা, লম্বার্ডি, পোপের রাজ্যে খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল। অস্ট্রিয়ার প্রধানমন্ত্রী মেটারনিকের দমননীতির কারণে এই দুই বারের বিদ্রোহ দমন করা হয় ও বহু বিদ্রোহীকে নির্বিচারে হত্যা করা হয়।

১৮৩০ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহ ঃ 

১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে একদিকে যেমন ফ্রান্সে জুলাই বিপ্লব শুরু হয় অন্যদিকে তেমনই কার্বোনারী সমিতির উদ্যোগে মধ্য ইতালিতে বিদ্রোহ শুরু হয়। বিদ্রোহীরা পোপের রাজ্যে একটি স্বাধীন যুক্তরাষ্ট্র গঠন করে। বিদ্রোহ ক্রমে পার্মা, মডেনা, পিডমন্ট ইত্যাদি অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছিল। অস্ট্রিয়া ও পোপের মিলিত বাহিনী কার্বোনারীদের এই বিদ্রোহ দমন করেছিল।

মূল্যায়ন ঃ কার্বোনারী সমিতি ছিল আংশিক ধর্মীয় সংগঠন। তবে এই সমিতি ইতালির স্বাধীনতা ও প্রগতির জন্য কাজ করেছিল। কার্বোনারী সমিতির আন্দোলন শেষপর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছিল একথা ঠিকই কিন্তু এই দলের আদর্শ ভবিষ্যতে আন্দোলনকারীদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল। 


আরও পড়ুন ঃ


Post a Comment

Previous Post Next Post