এমস টেলিগ্রাম কি -
প্রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বিসমার্ক জার্মানির ডেনমার্ক ও অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়লাভের মাধ্যমে জার্মানির ঐক্য প্রতিষ্ঠায় অনেকটা সফল হয়েছিলেন। প্রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বিসমার্ক ফ্রান্সের বিরুদ্ধে যুদ্ধে উস্কানি দেওয়ার উদ্দেশ্যে এমস টেলিগ্রাম প্রকাশ করেছিলেন। নিন্মে এমস টেলিগ্রাম সম্পর্কে আলোচনা করা হল -
স্পেনের সিংহাসনে আধিপত্য ঃ ফ্রান্সের পূর্ব সীমান্তে ধারাবাহিকভাবে জার্মানির উত্থান ঘটে। এরফলে ফ্রান্সের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যায়। এই পরিস্থিতিতে প্রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বিসমার্ক ফ্রান্সের পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত স্পেনের সিংহাসনে প্রাশিয়ার লিওপোল্ডকে বসানোর ব্যবস্থা করে। ফলে ফ্রান্স পূর্বে জার্মানি ও পশ্চিমে স্পেনের দ্বারা বেষ্টিত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হলে ফ্রান্সের জনগণ উত্তেজিত হয়ে ওঠে।
বেনেদেত্তির সাক্ষাৎকার ঃ প্রাশিয়া রাজ প্রথম উইলিয়াম পর্বতাবাসে এমস শহরে থাকাকালীন ফরাসি রাষ্ট্রদূত কাউন্ট বেনেদেত্তির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এই সাক্ষাৎকারে বেনেদেত্তি দাবি করেন যে, ভবিষ্যতে স্পেনের সিংহাসনে প্রাশিয়ার রাজবংশের কেউ বসবে না। এই মর্মে রাজাকে লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হবে।
এমস টেলিগ্রাম প্রকাশ ঃ বেনেদেত্তির সঙ্গে সাক্ষাৎকারের ঘটনা ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দের ১৩ জুলাই প্রথম উইলিয়াম টেলিগ্রাম যোগে প্রধানমন্ত্রী বিসমার্ককে জানান। এই সময় বিসমার্ক টেলিগ্রামের কয়েকটি শব্দ বাদ দিয়ে সংবাদপত্রে এমনভাবে প্রকাশ করেন যে, এতে ফরাসীদের মনে হয়, প্রাশিয়ার রাজা ফরাসি রাষ্ট্রদূতকে অপমান করেছেন। অন্যদিকে জার্মান বাসীর ধারণা হয় যে, বেনেদেত্তি প্রাশিয়ারাজ বেনেদেত্তিকে অপমান করেছেন। প্রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বিসমার্ক কর্তৃক প্রকাশিত এই টেলিগ্রামটি এমস টেলিগ্রাম নামে পরিচিত।
মূল্যায়ন ঃ জার্মানির চূড়ান্ত ঐক্যের জন্য ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দের সেডানের যুদ্ধে প্রয়োজন ছিল, যার পটভূমি বিসমার্ক এমস টেলিগ্রামের মাধ্যমে প্রকাশ করেছিলেন। অবশেষে সেডানের যুদ্ধের মাধ্যমে জার্মানির ঐক্য সম্পূর্ণ হয়।
আরও পড়ুন ঃ