বলকান অঞ্চলে রাশিয়ার অগ্রগতি -
ইজিয়ান সাগর ও দানিয়ুব নদীর মধ্যবর্তী পার্বত্য অঞ্চলে অবস্থিত বলকান অঞ্চল হল একটি উপদ্বীপ। সপ্তদশ শতক পর্যন্ত এই অঞ্চল ছিল অটোমান তুর্কি শাসকদের অধীনে। অষ্টাদশ শতকে অটোমান তুর্কি সাম্রাজ্য দুর্বল হয়ে পড়লে তুরস্কের বলকান অঞ্চলে রাশিয়া সম্প্রসারণ নীতি গ্রহণ করে। নিন্মে বলকান অঞ্চলে রাশিয়ার অগ্রগতির বিবরণ তুলে ধরা হল -
সম্প্রসারণের কারণ ঃ বহির্বিশ্বে যোগাযোগের জন্য রাশিয়ার পর্যাপ্ত জলপথ ছিল না। ইতিপূর্বে রাশিয়া বাল্টিক সাগরের জলপথে যাতায়াত করলেও এই সাগর সারাবছর বরফমুক্ত থাকত না। এজন্য রাশিয়া কৃষ্ণসাগর ও দার্দনেলস প্রণালী পার হয়ে ভূমধ্যসাগরে আসার পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এই অঞ্চলটি ছিল তুর্কি সাম্রাজ্যের অধীন। বলকান অঞ্চলে রাশিয়ার এই নীতি 'উষ্ণজল নীতি' নামে পরিচিত।
সম্প্রসারণ ঃ বলকান অঞ্চলে রাশিয়ার সম্প্রসারণ ছিল -
(i) রুশ জারিনা দ্বিতীয় ক্যাথারিনের আমলে ১৭৭৪ খ্রিস্টাব্দে রাশিয়া তুরস্কের সঙ্গে কুচুক কাইনারজির সন্ধি স্বাক্ষর করে। এই সন্ধির দ্বারা তুরস্কের কাছ থেকে রাশিয়া ইউক্রেন ও ক্রিমিয়া সহ বেশ কিছু অঞ্চল লাভ করে। এর ফলে রাশিয়া কৃষ্ণসাগরীয় শক্তিতে পরিণত হয়।
(ii) ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দের ভিয়েনা সম্মেলনের দ্বারা রাশিয়া তুরস্কের কাছ থেকে বেসারেরিয়া অঞ্চলটি লাভ করে।
(iii) এই সময় তুরস্কের অন্যান্য অঞ্চলেও রাশিয়া নিয়মিত আগ্রাসন চালায়।
মূল্যায়ন ঃ বলকান অঞ্চলে রাশিয়ার অগ্রগতি একদিকে রুশ-তুরস্ক সম্পর্কের অবনতি ঘটায়, অন্যদিকে রাশিয়ার অগ্রগতি রোধ করার জন্য ইংল্যান্ড, ফ্রান্স ও অস্ট্রিয়া এগিয়ে আসে। ফলে বলকান অঞ্চলে যুদ্ধের বাতাবরণ তৈরি হয়।